পাশাপাশি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে এমন দেশগুলো থেকে এলেও ৪৮ ঘণ্টার এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন।
রাজধানীর বিসিপিএস মিলনায়তনে বুধবার এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আফ্রিকা থেকে আসা যাত্রীদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
“একই সঙ্গে তাদেরকে ৪৮ ঘণ্টা আগের করোনার আরটিপিসিআর টেস্ট করে সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। যে কোনো দেশ থেকে করোনা টেস্ট ছাড়া যদি কেউ আসে, তাদেরকে অবশ্যই বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে। আমরা এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
বর্তমানে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসতে যাত্রার আগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা কোভিড পরীক্ষার সনদ থাকতে হয়। আফ্রিকা এবং ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে এমন দেশ ছাড়া অন্য সব দেশের ক্ষেত্রে ওই ৭২ ঘণ্টার নিয়মই প্রযোজ্য হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রেও এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “যদি দেখি, কোনো দেশ সাংঘাতিকভাবে আক্রান্ত হয়ে গেছে, সেইক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে।”
তিনি বলেন, বুধবারই এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের কাছে পৌঁছে যাবে। পাশাপাশি এ কাজে অন্য যেসব মন্ত্রণালয় জড়িত, তাদেরও চিঠি দেওয়া হবে।
বিদেশফেরত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য সেসব হোটেল ঠিক করা হয়েছিল, যাত্রী কমে আসায় সেগুলো আবার আগের মত স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে গেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সেসব হোটেল আবার প্রস্তুত করা হচ্ছে।
“আবারও তালিকা অনুযায়ী সেসব হোটেলে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে।”
দক্ষিণ আফ্রিকায় উদ্ভূত করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন পুরো বিশ্বেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। অনেক দেশ সীমান্ত বন্ধ করার পাশাপাশি ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ ঘোষণা করেছে।
এ পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে প্রবাসীদের বিদেশ থেকে দেশে না আসার আহ্বান জানান জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, বিদেশফেরত কারও মাধ্যমে বাংলাদেশে যেন ওমিক্রন আসতে না পারে সে চেষ্টা সরকার করছে।
“বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোতে যারা আছেন, অনুরোধ, আপনারা স্ব-স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করেন। কারণ একসঙ্গে যদি আফ্রিকা থেকেই ২০-৩০ হাজার লোক দেশে চলে আসেন, আমরা কিন্তু সবাইকে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করতে পারব না। এত সক্ষমতা আমাদের নাই। সব হোটেল নিলেও ১০-১৫ হাজারের বেশি লোক জায়গা দেওয়া যাবে না।”
বিদেশ থেকে দেশে ফিরে অনেকে ‘পরিচয় গোপন’ করছেন এবং গত এক মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা ২৪০ জনের ‘খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না’ বলে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আরও সতর্ক হতে সিভিল এভিয়েশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মানুষকেও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
“আমরা বিদেশফেরতদের খুঁজে বের করতে চাচ্ছি তিনি অসুস্থ কি না দেখতে। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, সে কার কার সঙ্গে মিশছে, তাদের চিকিৎসার আওতায় আনা…। আমরা তো কাউকে জেলে ঢুকিয়ে দেব না। আমরা তার ও পরিবারের মঙ্গলের জন্যই খুঁজছি।”